তবুও তুমি
তবুও
তুমি
রাত অনেক হয়েছে তবুও চোখে ঘুম নেই। কি জানি চোখ কেন ঘুমকে বিদায় দিয়েছে? শুয়ে শুয়ে শুধু চিন্তার ঘোরে ভেবে চলেছে শিউলী আকাশকে। আকাশকে সে ভালবাসে, হৃদয়ের সবটুকু ভালবাসা উজাড় করে দিয়ে ভালবাসে সে। আজ থেকে বেশ কিছু দিন দেখা নেই আকাশের সাথে। তাই শিউলীর আজ বার বার দেখতে ইচ্ছে করছে আকাশকে। আজ ওর চোখের সামনে ক্ষনে ক্ষনে বেসে উঠছে প্রথম প্রেমের সেই দিনের কথা। শিউলী তখন সপ্তম শ্রেণী পাস করে কেবল অষ্টম শ্রেণীতে পা রেখেছে। চৈত্রের বিদায়ে বৈশাখের ঘটঘটা মেঘ জমেছে আজ আকাশে; যেন এখনই কাল বৈশাখী তার তান্ডব প্রলয়ে বয়ে নিয়ে যাবে সব। বাহিরে পা রাখতে আজ ভয় হয়। সকালে আকাশে কোন মেঘ নেই, তাই তো শিউলী স্কুলে এসেছে। কিন্তু এমনই হবে জানলে কি আর আসতাম; ভাবছে শিউলী। স্কুল ছুটি হয়েছে যতই প্রতিকুলতা হোকনা কেন বাড়ীতে যেতেই হবে। নাইলে আবার বাবা-মা খুঁজে হয়রান হবেন। তাই আল্লাহর নাম নিয়ে ও পাড়ি জমায় বাড়ীর পথে। বড় রাস্তাটা পেরিয়ে গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে আনমনা হয়ে হেটে চলে সে। শনশন বাতাস বইছে। মনটা দুরুদুরু করছে। হঠাৎ প্রচন্ড এক শব্দে চমকে ওঠে শিউলী, থমকে দাঁড়ায়, সামনে পিছনে দেখ নেয়; আবার চলতে শুরু করে। কিছু দুর যেতেই আবার শব্দে থমকে দাড়িয়ে পিছনে ফিরে দেখেই হতবাক হয় শিউলী! আকাশ দাড়িয়ে আছে তার দিকে চেয়ে। আকাশের বাড়ী শিউলীদের বাড়ী থেকে দুই তিন মাইল দুরে হবে, উত্তর দিকে। আকাশ এবারে দশম শ্রেণীতে উঠেছে। তাই শিউলীদের বাড়ীর পাশে আকাশকে দেখে অবাক না হয়ে উপায় কি? অনেক ক্ষণ স্ব স্ব স্থানে দাড়িয়ে রইলো উভয়ে, কারো মুখে কোন কথা নেই; এভাবে কেটে গেল মিনিট আড়াই। তারপর আকাশ ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো শিউলীর দিকে, কাছে আসতে শিউলীর মনে হল অশান্ত হৃদয়ে তার ঝড়ের আঘাতে সব ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচ্ছে। কাছে এসে আকাশ বললো- আই লাভ ইউ, শিউলী আই লাভ টু ইউ ভেরী মাচ, ইউ আর মাই হার্ট এন্ড লাইফ। শিউলী নিঃচুপ দাড়িয়ে রইল। শুধু অপলক নয়নে তাকিয়ে রইলো আকাশের দিকে। তাদের প্রথম ভাবের ক্ষেত্রে বৃষ্টিটা ঘোল ঢেলে দিল, সুতরাং আর হল না দাড়ানো। উভয়ই চললো যার যার গন্তব্যের দিকে। যাবার কালে বার বার পিছনে ছুটে এলো দুটি নয়ন, দৃষ্টি বিনিময় করলো দুজনে যতক্ষণ না হারিয়ে গেল অন্য জন দৃষ্টির সীমানা থেকে। বাসায় ফিরে তড়িঘড়ি করে দুটো মুখে দিয়ে তার রুমে চলে গেল শিউলী, তারপর একটু গভীর ধ্যানে মগ্ন হলো সে। সবে মাত্র যৌবনের কলি ফুটতে শুরু করছে তার দেহে, নবযৌবনে কুসুমের ন্যায় কমল, প্রজাপতির পাখার ন্যায় নরম; শীতের চাদরের ন্যায় মায়া জড়ানো বদন আর মৃগনয়না ষোড়শীনির রূপ মাধুর্য্যে স্বর্গের অপ্সরা অপেক্ষা কম নয়। প্রেম ভালবাসা নিয়ে ভাববার কথা চিন্তা করেনি কোন দিন। কলেজে না উঠে প্রেম-ভালবাসা করবে না এ রকমের বাসনাটা আজ হঠাৎ ই আকাশের প্রস্তাবে বিদায় নিল মনের আঙ্গিনা থেকে আর উঁকি দিল আকাশের ভালবাসা আর যেন জীবন পেল আরো একটি নতুন জীবনের সন্ধান। গভীর ধ্যানে চোখের সামনে ভেসে এলো আকাশের বর্তমান ও অতীত এবং চিন্তার ভবিষ্যতের কথা, প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর আকাশ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো আর কেন বা ফ্যাল ফ্যাল করে তার দিয়ে তাকাতো বুঝতো না সে, এ নিয়ে কোন দিন ভাবিনি শিউলী। ভাবনার প্রশ্নই ছিল না। কিন্তু আজ হাজারও প্রশ্নের উত্তর পেয়েছে সে এক সাথে। ভালবাসার সামান্য এতটুকু আশ্বাসে সে স্বপ্ন দেখতে থাকে আগামী দাম্পত্য জীবনের। তারপর দিন;
Khub valo hoyasa. I like it. Thanks
ReplyDeletePlease Read the kobita.